অরিজিনাল চশমার ফ্রেম নাকি রেপ্লিকা? ফ্যাশনের জন্য কোনটা ব্যবহার করবেন?
চশমা আজকাল শুধু মানুষ প্রয়োজনেই ব্যবহার করছেনা। চোখের নানা সমস্যার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে চশমা পড়ার পাশাপশি অনেকে চশমা পরেন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে। সাধারণভাবে যেখানে প্রয়োজনে চশমা পরতে হয় এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবেও চশমা পরা হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম বা হালের ফ্যাশন সচেতনরা এখন চশমা ব্যবহার করছেন নিজের মুখমন্ডলে দৃষ্টিনন্দন পরিবর্তন আনার জন্য। তবে এসব চশমার ফ্রেম কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুকিও বাড়ায়। কারণ কম দামি চশমার ফ্রেমগুলো খুব নিম্ন মানের মেটেরিয়ালস দিয়ে তৈরী। এসব চশমার ফ্রেম আপনার স্কিনে এলার্জেটিক সমস্যাসহ নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অরিজিনাল চশমার ফ্রেমগুলো সাধারণত এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেনা । তাই একটু কষ্ট হলেও নিজের স্বাস্থ্য ঝুকির কথা ভেবে অরিজিনাল চশমার ফ্রেম ব্যবহার করা উচিত। অন্তত ভালো রেপ্লিকা।
ফ্যাশনের বা প্রয়োজনের এ সাধারণ চশমা আবার রোদচশমা থেকে একটু আলাদা। এ সাধারণ চশমা ধুলাবালি থেকে চোখকে রক্ষা করে বটে, তবে রোদ খুব একটা নিয়ন্ত্রণ করে না। অন্যদিকে রোদ চশমা ধুলাবালি ও রোদ দুইটাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে আপনি যদি ফ্যাশনের জন্য চশমা ব্যবহার করেন, তবে অবশ্যই ডেমো গ্লাসটি পরিবর্তন করে নেবেন। ডেমো গ্লাস চখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
চশমা ব্যবহার করার জন্যও কিছু ব্যাকরণ মেনে চলা ভালো; তবেই পাবে ফ্যাশনের পূর্ণাঙ্গতা ও চোখের আরামের নিশ্চয়তা। আর ফ্যাশনের দিকে থেকে চশমার কথা ভাবলে প্রথমেই নজর দিতে হবে চশমার ফ্রেমের দিকে। কারণ চশমার ফ্রেমটাই বদলে দেবে আপনার মুখের আউটলুক। মূলত চশমার ফ্রেমটাই চশমার ফ্যাশন। সেটা অরিজিনাল চশমার ফ্রেম হোক আর রেপ্লিকা যাই হোক না কেন।
ফ্যাশন কিংবা চোখের সমস্যা; যেটার জন্যই চশমা পরেন, সেটা দুই ধরনের পরতে পারেন। একটি কাজের সময় বা ক্লাসে ব্যবহারের জন্য, অন্যটি ঘরে বা বাইরে বের হলে বা বেড়াতে যাওয়ার জন্য। ঘরের ভেতর, বাইরে বা বেড়াতে যাওয়ার জন্য একটু হালকা কালার বা হালকা ডিজাইনের চশমা পরাটা ভালো। অন্যদিকে অফিসে বা ক্লাসে পরার জন্য একটু ভারিক্কি ডিজাইন বা কালার পরলে মানানসই। অফিসের জন্য আপনি অরিজিনাল চশমার ফ্রেম ব্যবহার করতে পারেন । অবশ্য যেটাই ব্যবহার করেন না কেন সেটা যেন স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। তবে চশমা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে বয়স ও মুখের আকৃতির ওপর। কারণ বয়স ও মুখের আকৃতি বুঝে চশমা ব্যবহার করলে সেটা হবে প্রকৃত ফ্যাশন। রোদ চশমা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বয়স ও মুখের আকৃতি জরুরি।
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধুলাবালি বা রোদ থেকে বাঁচার জন্য চশমা ব্যবহার করাটা ভালো, তবে তা অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে করা উচিত। আর যাদের চোখের সমস্যা আছে, তারা তো অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ফ্যাশন করতে গিয়ে চোখের সমস্যা হয়, এমন চশমা বা রোদচশমা ব্যবহার না করাটা উত্তম।
আজকাল তরুণ-তরুণীরা ফ্যাশনেবল চশমা বেশি ব্যবহার করছে। তাদের চোখের কোনো সমস্যা নেই, তবে তারা চশমা পরছে ফ্যাশন হিসেবে। আমরা সাধারণত মুখের আকৃতি ও বয়স বুঝে চশমা দেখাই। যার মুখের সঙ্গে যে ফ্রেম মানায় সেটাই দিই। তবে আমরা পরাশর্ম দিই যাতে এমন চশমা ব্যবহার না করতে, যে চশমা চোখের যন্ত্রণা বাড়ায়। কিছু কিছু রেপ্লিকা ফ্রেমের মেটেরিয়াল এতই বাজে যে, আপনার এলার্জেটিক প্রবলেম সহ নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই জন্য সামর্থ থাকলে অরিজিনাল চশমার ফ্রেম ব্যবহার করাই উত্তম।
মালিবাগের সেঞ্চুরি আর্কেড নামের মার্কেটে চশমার অসংখ্য দোকান আছে। পল্টনের বিজয় নগরেও পাবেন চশমার অসংখ্য দোকান। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলিতেও আছে চশমার খুচরা ও পাইকারির দোকান। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি শপিংমল, এলিফ্যান্ট রোড, ইস্টার্ন প্লাজা, নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, পলওয়েল মার্কেট, গাজী ভবনসহ ঢাকার বিভিন্ন শপিংমলে চশমার দোকান আছে। তবে এসব দোকানে অরিজিনাল চশমার ফ্রেম পাওয়া যায়না। এখানে সব ফ্রেমই চাইনিজ রেপ্লিকা । তবে রেপ্লিকা ফ্রেমও কিন্তু খারাপ নয় ।