শিশুর চোখের যত্নে FREE EYE SCREENING
দৃষ্টিহীনতা এবং অন্ধত্ব দূর করার জন্য বিশ্বব্যাপী উদ্যোগের মধ্যে বিভিন্ন দেশে শিশুদের চোখের স্বাস্থ্যর প্রতি বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে এই বিষয়ে যথেষ্ঠ কার্যক্রম নেই। গ্রামীণ এলাকার অকার্যকর পরিবেশে অধিকাংশ শিশুদেরকেই চোখের সমস্যার জন্য ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়না।
গ্রামে হোক অথবা শহরে হোক, শিশুরা বেশির ভাগ সময় স্কুলে থাকে। স্কুল থেকে এসে প্রাইভেট টিউটর, কোচিং, ইত্যাদি করতে করতে বাচ্চাদের সময় চলে যায়। বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শিক্ষা নেই। স্বাস্থ্য মানে শুধু শরীর নয়। শিশুদের অন্যান্য রোগের সাথে যে অদৃশ্য রোগটি শরিরে বাসা বাধে সেটি হচ্ছে, চোখের সমস্যা। শিশুদের চোখের পরীক্ষা নিয়মিত করা দরকার, কারণ শিশুরা তাদের চোখে সমস্যা রয়েছে কি না, তা বুঝতে পারে না। গ্রামাঞ্চলে শিশুদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও এই বিষয়ে চরম উদাসিন এবং অজ্ঞ। শারিরিকভাবে সুস্থ থাকা প্রতিটি শিশুর নৈতিক অধিকার। আমদের উচিত সেই অধিকার সুনিশ্চিত করা। উন্নত দেশগুলোতে বাচ্চাদের চোখের সমস্যা বোঝার জন্য প্রি-স্কুল স্ক্রিনিং করা হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতেও প্রতিটি এলাকায়, প্রায় প্রতিটি স্কুলে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বাচ্চাদের প্রি-স্কুল স্ক্রিনিং ক্যাম্প করা হয়।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। ভবিষ্যত এই প্রজন্মের সুস্থতার উপর দেশ ও দশের এগিয়ে যাওয়া অনেকাংশে নির্ভরশীল। শারীরিক ও মানষিক সুস্থতার পাশাপাশি চোখের সুস্থতাও সমান গুরুত্ব বহন করে। দৃষ্টিহীন শিশুকে অন্যের উপর নির্ভর করে সারাজীবন কাটাতে হয়। এতে দেশ দুই জন মানুষের পূর্ণাঙ্গ সেবা থেকে দেশ বঞ্চিত হয়। এছাড়াও পর নির্ভরশীলতার কারণে শিশু মানষিকভাবেও বির্পযস্ত হয়ে পড়ে। তাই সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত স্কুলের বাচ্চাদের স্কুল স্ক্রিনিং ক্যাম্প করা প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে স্বাস্থ্য সেবা খুবই গুরুত্ববহন করে এবং আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল পিতামাতার সন্তান যারা বিভিন্ন প্রাইমারী স্কুলে পড়াশোনা করে, সেইসব শিশুদের নিয়মিত EYE SCREENING করা উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে সমস্ত চক্ষুশিবিরগুলো হয়ে থাকে, তার বেশিরভাগই হয় বয়স্ক এবং সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য। এখানে সেবার চেয়ে সোস্যাল বিজনেসের আড়ালে ব্যবসাটাও মুখ্য থাকে। হাসপাতালগুলোর উদ্দেশ্যই থাকে চোখে ছানিপড়া রোগিগুলোর অপারেশনের ব্যবস্থা করা। এখানে বিশাল অংকের একটি ব্যবসা থাকে। আজ পর্যন্ত কোন চক্ষু হাসপাতাল গ্রামে অথবা শহরের স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের জন্য EYE SCREENINGক্যাম্প করেনি। অথবা করলেও সেটা খুবই সিমিত। কারণ এখানে কোন ব্যবসা নেই।
আমাদের কোম্পানি, “নাইন অপটিক ডট কম” দেশের প্রথম এবং একমাত্র অনলাইন স্টোর যারা অনলাইনে আইওয়্যার প্রোডাক্ট বিক্রি করে থাকে। আমরা ইতিমধ্য কিছু ফিচার সেবা চালু করেছি, যার মধ্য একটি হলো গরিব রোগি যারা চোখের সমস্যায় ভোগে কিন্তু প্রেসক্রিপশন গ্লাস কেনার সামর্থ্য নেই, তাদেরকে ফ্রি ফ্রেম দেয়া। আমরা বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এই অফারটির ক্যাম্পেইন করেছি এবং অনেকেই আমাদের কাছ থেকে এই সেবাটি নিয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র স্কুল এবং মাদ্রাসার ছাত্রদের আমরা এই সেবাটি দিয়েছি। এই সেবাটি এখনো বিদ্যমান। দরিদ্র রোগি, ছাত্র, ছাত্রী, শুধুমাত্র নামমাত্র মূল্য একটি প্রেসক্রিপশন লেন্স ক্রয় করে এবং ফ্রেমটি আমরা ফ্রিতে সরবরাহ করি।
সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামাঞ্চলেও এন্ড্রয়েড ফোনের অহরহ ব্যবহার লক্ষ করা যায়। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এই ডিভাইসের সাথে সমানভাবে আক্রান্ত। এন্ড্রয়েড ফোনের Blue Light এবং Radiation চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে বাচ্চাদের চোখের জন্য এই ডিভাইস একটি মরনব্যাধি। অথচ সচেতন করার কেও নেই। এই ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার একটি বাচ্চার চোখকে আজীবনের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।
আমরা জানি বেসরকারি পর্যায়ে এই বৃহৎ জনগোষ্ঠির মাঝে এই বিষয়ে সচেতনা সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সরকারি উদ্যোগ। কিন্তু সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। কোন কিছু শুরু না করলে সেটা কখনো ট্রেন্ড হয়না আমরা জানি। আর বিন্দু থেকেই সিন্ধুর সৃষ্টি হয়। তাই “নাইন অপটিক ডট কম” উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা এবং এর আশে পাশের দরিদ্র স্কুলগুলোতে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৪টি ফ্রি EYE SCREENINGক্যাম্প করবে। নিম্নোক্ত বিষয়গুলো এই ক্যাম্পেইনের সাথে যুক্ত থাকবে।
১। অভিজ্ঞ অপটিশিয়ান এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে বিনামূল্য ছাত্র-ছাত্রীদের চোখ পরীক্ষা করা।
২। চোখের রোগ সনাক্ত করার পর বিনামূল্য প্রয়োজনীয় ঔষধ বিতরন করা।
৩। প্রেসক্রিপশন গ্লাসের প্রয়োজন হলে, বিনামূল্য তা বিতরন করা।
৪। কোন ছাত্র ছাত্রীর যদি ছানি অপারেশনের প্রয়োজন হয়, বিনামূল্য তার ব্যবস্থা করা।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে আমরা প্রাথমিকভাবে ঢাকা এবং গাজিপুরের ২০টি প্রাইমারি এবং প্রি প্রাইমারি স্কুল বাছাই করে আমাদের এই কার্যক্রম শুরু করবো। আমাদের বিশ্বাস বেসরকারী পর্যায়ে আরো অনেক কোম্পানি এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আমাদের এই উদ্যোগের সাথে চাইলে যেকোন ভাবে আপনিও থাকতে পারেন।