অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম বাংলাদেশে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস এর online market এর উপর একটি লেখা লিখব। যেহেতু আমি এই পেশায় জড়িত। কিন্তু সময়ের অভাবে সেটা হয়ে উঠছে না। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং মার্কেটপ্লেসগুলো ঘেঁটে যা দেখা গেছে তাহলো বাংলাদেশের অনলাইন মার্কেটে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস এর আইটেম গুলো কেনা কাটার জন্য এখনো এতটা জনপ্রিয় নয় যতোটা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। এর পেছনে কিছু বাস্তব কারণ রয়েছে। প্রথমত বাংলাদেশের মানুষ দোকানে গিয়ে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, সেটা যেকোন জিনিসের ক্ষেত্রেই। তারা তাদের ইচ্ছামতো product পছন্দ করতে পারে, দামাদামি করতে পারে, এক দোকানে পছন্দ না হলে অন্য দোকানে যেতে পারে। কিন্তু অনলাইনের বিষয়টা হল এখানে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বলয়ের মধ্যে থেকে প্রোডাক্ট পছন্দ করতে হবে। এখানে জেনে রাখা ভালো অনলাইনে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস কেনার জন্য আপনাকে কিছু জিনিস জানা থাকতে হবে। প্রথমত আপনাকে জানতে হবে আপনি কি শেপের চশমার ফ্রেম পরেন। দ্বিতীয়তঃ আপনাকে আপনার চশমার ফ্রেম মাপ জানতে হবে। এই দুইটা জিনিস জানার পর আপনার অনলাইনে চশমার ফ্রেম কিনতে কোনোরকম অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আপনি চশমার ফ্রেমর টেম্পেল এর ভিতর দেখবেন কিছু সংখ্যা লিখা আছে , সেই সংখ্যাগুলি আসলে আপনার চোখের জন্য মানানসই চশমার ফ্রেমর মাপ।
বাংলাদেশের মানুষ এখনো অনলাইনে খুব একটা বিশ্বাসী নয়। কিছু মানুষের একটা ভ্রান্ত ধারনা হলো, online seller গুলো যে প্রডাক্টের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রোডাক্ট সেল করে থাকে বাস্তবে ডেলিভারি দেয়ার সময় তারা অন্য একটি product delivery দিয়ে দেয়। এগুলো আসলে উড়া কথা। সম্পূর্ণ একটি ভ্রান্ত ধারণা থেকে মানুষ এইসব প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে থাকে। বিশেষ করে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি একেবারেই অসম্ভব। কেননা এখানে আপনাকে যে মাপের এবং যে ব্রান্ডের চশমার ফ্রেমর ছবি দেখানো হবে, সেটাই আপনাকে দেয়া হবে। সানগ্লাস এর ক্ষেত্রে কালারের একটা বিষয় থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি যেই কালারটি অর্ডার দিলেন সেই color টির নাম আপনাকে মনে রাখতে হবে কারণ delivery নেয়ার সময় আপনার অর্ডারকৃত জিনিসটি বুঝে নেয়ার দায়িত্ব শুধু আপনারই। অনেকেই বলে থাকেন অর্ডার করলাম কিন্তু পেলাম আরেক। আসলে color variation এর ক্ষেত্রে আপনাদের একটি জিনিস বুঝতে হবে যে, ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় কালার এর রেজুলেশন কিছুটা এদিক সেদিক হয় এই জন্য বাস্তবের চেয়ে ছবিতে color একটু ভিন্ন দেখায়। তবে টেন পারসেন্ট এর বেশি variation হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং গ্রহনযোগ্য নয়।
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এখন অনলাইনে প্রচুর পরিমাণে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস কেনাকাটা হয় কারন এটাতে তারা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এতে একদিকে ক্রেতা ঘরে বসে প্রোডাক্ট ক্রয় করার সুবিধা পাচ্ছেন এবং তাকে কষ্ট করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে দোকানে যেতে হচ্ছে না। সে ঘরে বসে হোম সার্ভিসের মাধ্যমে একটি চমৎকার সার্ভিস পাচ্ছেন এমনকি prescription লেন্স এর জন্যও তাকে দোকানে যেতে হচ্ছে না কারণ prescription লেন্স আপনি যখনই স্ক্যান করে online seller কে দেবেন তখন তারাই প্রেসক্রিপশন লেন্সের power অনুযায়ী আপনার পছন্দের চশমার ফ্রেমর ফ্রেমে সেটা সেট করে দেবেন।
বাংলাদেশের দিনের পর দিন চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাসের মার্কেট অনলাইনে প্রসার হচ্ছে। এর বাস্তব প্রমান ইতিমধ্য কয়েকটি সাইট অনলাইনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। chosmabd.com, nineoptic.com, dukpeon.com ইত্যাদি সাইটগুলো এর মধ্য অন্যতম। তারা তাদের নিজস্ব সাইট এবং ফেসবুকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর মধ্য নাইন অপটিক হচ্ছে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে customer তাদেরকে অনলাইনে অর্ডার প্রদান করে থাকেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস এর জন্য এই সাইটটি দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন স্টোর । তাদের প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং সার্ভিস দু’টিই অত্যন্ত চমৎকার। এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি কম দামের ফ্রেম থেকে শুরু করে 30-40 হাজার টাকা দামের ফ্রেমও আপনি ক্রয় করতে পারেন। original সানগ্লাস এবং original আইগ্লাসের জন্য নাইট অপটিক সাইটটি আপনি ভিসিট করে দেখতে পারেন। এখানে দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাদের চশমার ফ্রেম এবং প্রেসক্রিপশন লেন্স অর্ডার করেছেন । এটা তাদের সাইটের লুক বুক দেখলে বুঝা যায়। এই সাইটটি ঢাকাসহ সারাদেশ ব্যাপী হোম ডেলিভারির মাধ্যমে তাদের product supply করে থাকেন। তবে এই মুহুর্তে চট্টগ্রাম এবং খুলনা বিভাগে সার্ভিস দেয়া হয় না। ঢাকার ভেতরে customer phone করার সাথে সাথে নাইন অপ্টিকের সেলসম্যান প্রোডাক্ট নিয়ে কাস্টমারের বাসায় অথবা অফিসে হাজির চলে যান। সেখান থেকে কাস্টমার পছন্দ করে তার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্ডার দিতে পারবেন আর যদি পছন্দ না হয়, সে ক্ষেত্রেও কাষ্টমারকে আলাদা কোন চার্জ দিতে হয়না।
এই অনলাইন কোম্পানিটি অনলাইনে সার্ভিস দেয়ার পাশাপাশি অফলাইনেও তাদের সার্ভিস দিয়ে থাকে। আপনি ইচ্ছে করলে তাদের অফিসে গিয়ে product দেখে অর্ডার করতে পারেন। অনলাইনে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস এর market দিনের পর দিন জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশি। এখানে একটি সুবিধা হল আপনি অনলাইনে অর্ডার দিয়ে বাসায় নিয়ে প্রোডাক্ট পছন্দ করে অর্ডার কনফার্ম করতে পারেন। আপনার কাছে কেনা না কেনার দুটি অপশনই আছে। চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস জাতীয় product online থেকে ক্রয় করলে আপনি প্রতারিত হবেন না এটা নিশ্চিত। এখানে আপনাকে ঠকানোর মত কিছু নেই। আমাদের দেশে সাধারণত কপি এবং রেপ্লিকা চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস বিক্রি করা হয়। আপনি দোকান থেকে যে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস অরিজিনাল মনে করে ক্রয় করবেন সেটা যে original এটা বুঝার মতো অবস্থা আসলে সাধারণ কাস্টমারে নেই। এবং কি যারা চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস বিক্রির সাথে জড়িত, তারাও অনেক সময় বুঝতে পারেনা। কারন অরিজিনাল এবং রেপ্লিকা দেখতে শতভাগ একই রকম এবং কাছাকাছি মানের । সুতরাং আপনাকে বিশ্বাস করে কিনতে হবে। আপনি যদি দোকানে গিয়ে বিশ্বাস করতে পারেন তাহলে অনলাইনে আপনি কেন বিশ্বাস করতে পারছেন না। বাংলাদেশ চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস জাতীয় প্রোডাক্টের মধ্যে মোটামুটি নব্বই ভাগ product আসে চায়না থেকে বাকি দশ ভাগ বিভিন্ন লাগেজ এর মাধ্যমে হংকং অথবা ইউরোপ থেকে আসে। এই দশ ভাগ প্রোডাক্ট এর ভিতর original product আপনি পাবেন। কিন্তু সেটা আসলে specific কোন দোকানে বিক্রি হয় সেটা বলার মত কারও সাধ্য নেই।
চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস জাতীয় প্রোডাক্টগুলোর দাম নির্ধারণ হয় এর ব্র্যান্ড ইমেজ এর মাধ্যমে। আমাদের দেশে অসাধু দোকানদার গুলো রেপ্লিকা একটা সানগ্লাস যেটার দাম সর্বোচ্চ 1,000 টাকা হওয়ার কথা সেটা বিভিন্ন কাস্টমারের সরলতার সুযোগ নিয়ে সাত/আট হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকেন। কারণ সেটা আপনি জাস্টিফাই করতে পারবেন না, আপনি ঠক্লেন না জিতলেন। আপনি যদি একই জিনিস অনলাইনে ক্রয় করেন তাহলে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি সেই প্রোডাক্টের দাম এক হাজার থেকে পনেরশ টাকার বেশি হবেনা। কোন অনলাইন সেলার এতটা গলা কাটা দাম রাখবেনা । সুতরাং অনলাইনে চশমার ফ্রেম এবং সানগ্লাস জাতীয় প্রোডাক্ট কেনার জন্য আপনার এখনই সময়। দেড়ি করে কি লাভ? শুরু করে দিন। ভিজিট করুন;